গগনে প্রলয় মেঘের মেলা জীবন-ভেলা দোলে টলমল
নীর অপার ভব পারাবার তীর না হেরে পরান বিকল
তীর না হেরে নয়নে পরান বিকল।।
দীন দয়াল ভীত দীন জনে
মাগে শরণ তব অভয় চরণে
দুস্তর দুর্গম দুঃখ জলধি তরিতে চরণ-তরী ভরসা কেবল।।
গ
গগনে পবনে আজি ছড়িয়ে গেছে রঙ
গগনে পবনে আজি ছড়িয়ে গেছে রঙ
নিখিল রাঙিল রঙে অপরূপ ঢঙ॥
চিত্তে কে নৃত্যে মাতে দোল লাগানো ছন্দে,
মদির রঙের নেশায় অধীর আনন্দে,
নাচিছে সমীরে পুষ্প, পাগল বসন্ত, বাজে মেঘ মৃদঙ।।
প্রাণের তটে কামোদ নটে সুর বাজিছে সুমধুর –
দুলে অলকানন্দ রাঙা তরঙ্গে
শিখী কুরঙ্গ নাচে রঙিলা ভ্রুভঙ্গে,
বাজিছে বুকে সুর-সারং কাফির সঙ্গ্
গগনে খেলায় সাপ বরষা-বেদিনী
গগনে খেলায় সাপ বরষা-বেদিনী।
দূরে দাঁড়ায়ে দেখে ভয়-ভীতা মেদিনী।।
দেখায় মেঘের ঝাপি তুলিয়া
ফনা তুলি’ বিদ্যুৎ-ফণি ওঠে দুলিয়া,
ঝড়ের তুব্ড়িতে বাজে তার অশান্ত রাগিণী।।
মহাসাগরে লুটায় তার সর্পিল অঞ্চল
দিগন্তে দুলে তার এলোকেশ পিঙ্গল
ছিটায় মন্ত্রপূত ধারাজল অবিরল তন্বী-মোহিনী।।
অশনি-ডমরু ওঠে দমকি’
পাতালে বাসুকি ওঠে চমকি’
তার ডাক শুনে ছুটে আসে নদীজল যেন পাহাড়িয়া নাগিনী।।
গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে
গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে – কিশোর কৃষ্ণ দোলে বৃন্দাবনে।
থির সৌদামিনী রাধিকা দোলে নবীন ঘনশ্যাম সনে;
দোলে রাধা শ্যাম ঝুলন-দোলায় দোলে আজি শাওনে।।
পরি’ ধানি রঙ ঘাঘরি, মেঘ রঙ ওড়না
গাহে গান, দেয় দোল গোপীকা চল-চরণা,
ময়ূর নাচে পেখম খুলি’ বন-ভবনে।।
গুরু গম্ভীর মেঘ-মৃদঙ্গ বাজে আঁধার অশ্রুর তলে,
হেরিছে র্রজের রসলীলা অরুন লুকায়ে মেঘ-কোলে।
মুঠি মুঠি বৃষ্টির ফুল ছুঁড়ে হাসে
দেব-কুমারীরা হেরে অদূর আকাশে,
জড়াজড়ি করি’ নাচে, তরুলতা উতলা পবনে।।