বুলবুল (২য় খন্ড)

১৩৫২ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ ( মে, ১৯৫৯ ) প্রমীলা নজরুল ইসলাম ১৬, রাজেন্দ্রলাল স্ট্রিট, কলিকাতা-৬, এই বুলবুল (২য় খন্ড) নামীয় সঙ্গীতগ গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। গ্রন্থটির পরিবেশক ছিলেন ডি এম লাইব্রেরি। মূল্য আড়াই টাকা। গ্রন্থটিতে গান ছিল ১০১টি। কবি-পত্নী প্রমীলা নজরুল ইসলাম প্রকাশিকার ভূমিকায় লেখেন, “কবির আধুনিক গানগুলি সংকলন করে “বুলবুল” (২য়) প্রকাশ করা হলো। তাড়াতাড়ি প্রকাশ করার জন্য ছাপায় কিছু ভুল থেকে গেছে। পরবর্তী সংস্করণে আশা করি কোনো ভুল থাকবে না। বইটির শেষ পৃষ্ঠায় কিছু সংশোধন করে দেওয়া হয়েছে। এই গানের বইটির আরেকটি বিশেষত: এই যে, এর মধ্যে কবির আধুনিক অপ্রকাশিত কতকগুলি গান আমরা দিতে পেরেছি। নজরুলগীতি যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের কাছে এই বইটি সমাদর পেলে, আমি আমার প্রথম প্রচেষ্টাকে সার্থক বলে মনে করবো।”

বুলবুল (২য় খন্ড)-এ গ্রন্থিত গানসমূহ হলো:

বুলবুলি নীরব নার্গিস-বনে
বিদায়ের বেলা মোর ঘনায়ে আসে
যারে হাত দিয়ে মালা দিতে পার নাই
আমি চিরতরে দুরে চলে যাব
সবার কথা কইলে কবি
ওরে ডেকে দে দে লো
নয়ন-ভরা জল গো তোমার
আমি চাঁদ নহি, চাঁদ নহি অভিশাপ
ভুল করে যদি ভালবেসে থাকি
আমি আছি বলে দুখ পাও তুমি
আর অনুনয় করিবে না কেউ
মোরা আর জনমে হংস-মিথুন
গভীর রাতে জাগি খুঁজি তোমারে
গভীর নিশীথে ঘুম ভেঙে যায়
রূপের দীপালি-উৎসব আমি দেখেছি
এবার যখন উঠবে সন্ধ্যাতারা – সাঁঝ আকাশে
বলেছিলে, তুমি তীর্থে আসিবে
ঘুমাইতে দাও শ্রান্ত রবি রে
নূরজাহান ! নূরজাহান
রাজো বাঁশরি বাজো বাঁশরি
বলরে তোরা ওরে ও আকাশ-ভরা তারা
সেদিন ছিল কি গোধূলি-লগন
মোর ভুলিবার সাধনায় কেন সাধ বাদ
আমার ভুবন কান পেতে রয়
আন গোলাপ-পানি
কুহু কুহু কুহু কুহু কোয়েলিয়া
প্রদীপ নিভায়ে দাও
রেশমি রুমালে কবরী বাঁধি
নিশিরাতে রিম্ ঝিম্ ঝিম্ বাদল-নূপুর
ভোরের ঝিলের জলে শালুক
সন্ধ্যা নেমেছে আমার বিজন ঘরে
আজো ফাল্গুনে বকুল কিংশুকের বনে
যখন আমার গান ফুরাবে
ওগো সুন্দর তুমি আসিবে বলিয়া বনপথে পড়ে ঝরি
ঝুম ঝুম ঝুমরা নাচ নেচে কে এল গো
মনে পড়ে আজও সেই নারিকেল কুঞ্জ
আমি পুরব দেশের পুরনারী
তেমনি চাহিয়া আছে নিশীথের তারাগুলি
নন্দন বন হতে কে গো ডাক মোরে আধ-নিশীথে
শাওন রাতে যদি স্মরণে আসে মোরে
কাবেরী নদী- জলে কে গো বালিকা
বসন্ত মুখর আজি
তুমি সুন্দর, তাই চেয়ে তাকি প্রিয়
তুমি প্রভাতের সকরুণ ভৈরবী
কেন মেঘের ছায়া আজি চাঁদের চোখে
বন্ধু, আজো মনে রে পড়ে
ধর্মের পথে শহীদ যাহরা
তুমি আমার সকালবেলার সুর
আগের মতো আমের ডালে বোলে ধরেছে বউ
তব মুখখানি খুঁজিয়া ফিরি গো
মোর গানের কথা যেন আলোকলতা
এই বিশ্বে আমার সবাই চেনা
কত দূরে তুমি, ওগো আঁধারের সাথী
অনেক ছিল বলার
বন্ধু! দেখলে তোমায় বুকের মাঝে
বন-বিহঙ্গ! যাও রে উড়ে
এ-কুল ভাঙে ও-কুল গড়ে
উজান বাওয়ার গান গো এবার
যবে ভোরের কুন্দ-কলি মেলিবে আঁখি
মোর স্বপ্নে যেন বাজিয়েছিলে করুণ রাগিণী
আমি সন্ধ্যামালতী বন-ছায়া অঞ্চলে
শাওন আসিল ফিরে ; সে ফিরে এল না
বেদিয়া বেদিনী ছুটে আয়
মোর প্রিয়া হবে, এস নারী
ফুলের জলসায় নীরব কেন কবি
নীলাম্বরী শাড়ি পরি
আধো রাতে যদি ঘুম ভেঙে যায়
আমায় নহে গো, ভালবাসা শুধু ভালবাস মোর গান
দোলন-চাঁপা বনে দোলে
জুঁই-কুঞ্জে বন-ভোমরা কেন গুঞ্জে গুন্গুন্
মমতাজ! মমতাজ! তোমার তাজমহল
আমি জানি তব মন, আমি বুঝি তব ভাষা
স্বপ্নে দেখি একটি নুতন ঘর
ছড়ায়ে বৃষ্টির বেলফুল
রাঙা মাটির পথে লো মাদল বাজে
রিম্ ঝিম্ রিম্ ঝিম্ ঘন দেয়া বরষে
ওগো প্রিয়, তব গান
কেমনে হইব পার হে প্রিয়
সাপুড়িয়া রে! বাজাও কোথায় সাপ খেলানোর বাঁশি
নদীর ¯্রােতে মালার কুসুম ভাসিয়ে দিলাম, প্রিয়
শোক দিয়েছ তুমি হে নাথ
হে অশান্তি মোর এস এস
গান ভুলে যাই মুখ পানে চাই, সুন্দর হে
মেঘলা নিশি-ভোরে
“চোখ গেল” “চোখ গেল” কেন ডাকিস রে
পদ্মার ঢেউ রে-
কত ফুল তুমি পথে ফেলে দাও, মালা. গাঁথ অকারণে
আমি নহি বিদেশিনী
মেঘ-মেদুর বরবায় কোথা তুমি
নিরজন ফুলবনে এস পিয়া
সেই মিঠে সুরে মাঠের বাঁশরি বাজে
(তুমি) শুনিতে চেয়ো না আমার মনের কথা
গাঙে জোয়ার এল ফিরে, তুমি এলে কই
রুম্ ঝুম্ ঝুম্ ঝুম্ রুম্ ঝুম্ ঝুম্
নিশি-পবন। ফুলের দেশে যাও
কোন সে সুদূর অশোক-কাননে বন্দিনী তুমি সীতা
তব চলার পথে আমার গানের পুল ছড়িয়ে যাই গো
শুকনো পাতার নূপুর বাজে দখিন বায়ে
জানি, জানি প্রিয়, এ জীবনে মিটিবে না সাধ
বঁধু তোমার আমার এই যে বিরহ
এবং পঞ্চ প্রাণের প্রদীপ-শিখায়
নয়ন ভরা জলগো তোমার