রাঙা-জবা

১০০টি শ্যামাসঙ্গীতে সমৃদ্ধ রাঙা-জবা গ্রন্থটি প্রকাশ করেন ২৪ পরগনার রাজীবপুরের বেগম মরিয়ম আজিজ। গ্রন্থটির প্রথম প্রকাশ ১ বৈশাখ ১৩৭৩ শুক্রবার ( এপ্রিল, ১৯৬৬ )। মূল্য তিন টাকা। নজরুল নিজের জীবনে তন্ত্র ও যোগাসাধনা করেছেন। শক্তিপূজায় তাঁর ভক্তহৃদয়ের অকৃত্রিম আকুলতা ও আর্তি এইসব গানের মধ্যে রূপায়িত।

রাঙা-জবা গ্রন্থটিতে যে সকলশ্যামাসঙ্গীত আছে সেগুলি হলো :

বলে রে জবা বল
মহাকালের কোলে এসে
ভুল করেছি ওমা শ্যামা বনের পশু বলি দিয়ে
তোর কালো রূপ লুকাতে মা বৃথাই আয়োজন
(ওমা ) দুঃখ অভাব ঋণ যত মোর
(আমায় )আর কতদিন মহামায়া
ফিরিয়ে দে মা ফিরিয়ে দে গো
মোরে আঘাত যত হানবি শ্যামা
এস আনন্দিতা ত্রিলোক-বন্দিতা
ওরে আলয়ে আজ মহালয়া, মা এসেছে ঘর
কে বলে মোর মাকে কালো
মা গো আমি তান্ত্রিক নই
মা গো তোমার অসীম মাধুরী
কে পরালো মুন্ডামালা
নাচে রে মোর কালো মেয়ে
আনন্দের আনন্দ
মা এসেছে মা এসেছে
দেখে যারে রুদ্রাণী মা
মাতল গগন অঙ্গন ঐ
শ্মশানকালীর নাম শুনে
মা হবি না মেয়ে হবি
মা গো আজো বেঁচে তোরি প্রসাদ পেয়ে
দুর্গতিনাশিনী আমার
যে নামে মা ডেকেছিল সুরথ আর শ্রীমন্ত তোরে
পরম পুরুষ সিদ্ধ-যোগী মাতৃভক্ত যুগাবতার
জয় বিবেকানন্দ বীর সন্ন্যাসী
আমার হৃদয় অধিক রাঙা মা গো
মায়ের চেয়েও শান্তিময়ী
কেঁদো না কেঁদো না মাকে কে বলেছে কালো
তুই পাষাণ গিরির মেয়ে হলি
মা গো আমি মন্দমতি
শক্তের তুই ভক্ত শ্যামা
মা গো আমি আর কি ভুলি
ওমা নির্গুণেরে প্রসাদ দিতে
আমায় যারা দেয় মা ব্যথা, আমায় যারা আঘাত করে
করুণা তোর জানি মা গো
আয় নেচে আয় এ বুকে
আজও মা তোর পাইনি প্রসাদ
কোথায় গেলি মা গো আমার
মা কবে তোরে পারব দিতে
জগৎ জুড়ে জাল ফেলেছিস্
কালী কালী মন্ত্র জপি
আদরিণী মোর শ্যামা মেয়ে রে
শ্যামা তোর নাম যার জপমালা
আমি নামের নেশায় শিশুর মত (ওমা) বক্ষে ধরেন শিব যে চরণ
রক্ষা-কালির রক্ষা-কবচ আছে আমায় ঘিরে
(আমার) মুক্তি নিয়ে কি হবে মা
(মায়ের) অসীম রূপ-সিন্ধুতে রে
(আমার) কালো মেয়ে পালিয়ে বেড়ায়
জাগো যোগমায়া জাগো মৃন্ময়ী
অসুর বাড়ির ফেরৎ এ মা
আঁধার ভীত এ চিত যাচে মা গো আলো আলো
মা তোর চরণ-কমল ঘিরে
আয় মা চঞ্চলা মুক্তকেশী শ্যামা কালী
শ্মশানে জাগিছে শ্যামা
আয় অশুচি আয় রে পতিত
দীনের হতে দীন দুঃখী অধম যথা থাকে
(মা) এক্লা ঘরে ডাকব না আর
(তুই) বলহীনের বোঝা বহিস্ যেথায় ভৃত্য হয়ে
কেন আমায় আনলি মা গো মহারানীর সিন্ধুকূলে
ভাগীরথীর ধারার মত সুধার সাগর পড়–ক ঝরে
মা গো তোরি পায়ের নূপুর রাজে
জ্যোতির্ময়ী মা এসেছে আঁধার আঙিনায়
তোর কালো রূপ দেখতে মা গো
বল্ মা শ্যামা বল্ তোর বিগ্রহ কি মায়া জানে
মাকে ভাসায়ে জলে কেমনে রহিব ঘরে
কে সাজালো মাকে আমার
(আমার) আনন্দিনী উমা আজো
আমার উমা কই
গিরিরাজ সংসারেই দোলনাতে মা
মহবিদ্য আদ্যাশাক্তি
প্রণমামি শ্রীদুর্গে নারায়ণী
নন্দলোক থেকে আমি এনেছি রে
মায়ের আমার রূপ দেখে যা
নিপীড়িতা পৃথিবী ডাকে
মোরে আঘাত যত হানবি শ্যামা
কেন আমায় আনলি মা গো মহাবাণী সিন্ধুকূলে
আয় বিজয়া আয় রে জয়া
সর্বনাশি ! মেখে এলি এ কোন চুলোর ছাই
আমার কালো মেয়ে রাগ করেছে
শ্যামা মায়ের কোলে চড়ে
মা ত্রিনয়নী ! সেই চোখ দে
মা ! আমি তোর অন্ধ ছেলে
আমার শ্যামা বড় লাজুক মেয়ে
আমার মা আছে রে সকল নামে
ওমা তোর ভুবনে জ্বলে এত আলো
ওমা তুই আমারে ছেড়ে আছিস
আমার মানস-বনে ফুটেছে রে শ্যামা লতার মঞ্জরী
শ্যামা নামের লাগল আগুন আমার দেহ-ধূপকাঠিতে
ওমা খড়্গ নিয়ে মাতিস রণে
আমার হৃদয় হবে রাঙা জবা
দেহ বিল্বদল
যে কালীর চরণ পায় রে
তোরই নামের কবচ দোলে
মাতৃ নামের হোমের শিখা
আয় মা ডাকাত কালী আমার ঘরে কর ডাকাতি
আমি মুক্তা নিতে আসিনি মা
আমি সাধ করে মোর গৌরী মেয়ের
আমর ভবের অভাব লয় হয়েছে
থির হয়ে তুই বস দেখি মা।