এ নহে বিলাস বন্ধু ফুটেছি জলে কমল

এ নহে বিলাস বন্ধু ফুটেছি জলে কমল
এ যে ব্যথা রাঙা হৃদয় আখিঁ জলে টলমল।।
কমল মৃণাল দেহ ভরেছে কন্টক ঘায়
শরণ লয়েছি গো তাই শীতল দীঘির জল।।
ডুবেছি আজ কালো জলে কত যে জ্বালা স’য়ে
শত ব্যথা ক্ষত লয়ে হইয়াছি শতদল।।
কবি রে কোন ক্ষত মুখে ফোটে যে তোর গীত সুর
সে ক্ষত দেখিল না কেউ দেখিল তোরে কেবল
সে গীতি দেখিল না কেউ শুনিল গীতি কেবল।।

Categories

আমিনা-দুলাল নাচে হালিমার কোলে

আমিনা-দুলাল নাচে হালিমার কোলে
তালে তালে সোনার বুকে সোনার তাবিজ দোলে।।
সে কাঁদিলে মুক্তা ঝরে হাসলে ঝরে মানিক
ঈদের চাঁদে লেগে আছে সেই খুশির খানিক।
তাঁর কচি মুখে খোদার কালাম আধো আধো বলে।।
দেখেছিল লুকিয়ে সে নাচ কোটি গ্রহতারা
আসমানে তাই ঘোরে তারা আজো দিশাহারা
সেদিন নেচেছিল বিশ্বভুবন ইয়া মোহাম্মদ ব’লে।।
কোরানের আয়াতে লেখা সেই নাচেরই ছন্দ
তকবীরের ধ্বনিতে বাজে তাহারি আনন্দ
আমি থাকলে সেদিন হতাম ধূলি তাঁহার পায়ের তলে।।

Categories

আমি হব মাটির বুকে ফুল

আমি হব মাটির বুকে ফুল
প্রভাত বেলা হয়ত পাব তোমার চরণ মূল।।
ঠাঁই পাব গো তোমার থালায়
রইব তোমার গলার মালায়
সুগন্ধ মোর মিশবে হাওয়ায় আনন্দ আকুল।।
আমার রঙে রঙিন হবে বন
পাখির কণ্ঠে আনব আমি গানের হরষণ।
নাই যদি নাও তোমার গলে
তোমার পূজা বেদীর তলে
শুকাবে গো সেই হবে মোর মরণ অতুল।।

Categories

আমিসূর্যমুখী ফুলের মত দেখি তোমায় দূরে থেকে

আমিসূর্যমুখী ফুলের মত দেখি তোমায় দূরে থেকে
দলগুলি মোর রেঙে ওঠে তোমার হাসির কিরণ মেখে’।।
নিত্য জানাই পেম-আরতি
যে পথে, নাথ, তোমার গতি
ওগো আমার ধ্রুব-জ্যোতি সাধ মেটে না তোমায় দেখে’।।
জানি, তুমি আমার পাওয়ার বহু দূরে, হে দেবতা!
আমি মাটির পূজারিণী, কেমন ক’রে জানাই ব্যথা।
সারা জীবন তবু, স্বামী,
তোমার ধ্যানেই কাঁদি আমি
সন্ধ্যাবেলায় ঝরি যেন তোমার পানে নয়ন রেখে’।।

Categories

আমি সন্ধ্যামালতী বনছায়া অঞ্চলে

আমি সন্ধ্যামালতী বনছায়া অঞ্চলে
লুকাইয়া রই ঘন পল্লব তলে ॥
বিহগের গীতি ভ্রমরের গুঞ্জন, নীরব হয় যখন–
আমি চাঁদেরে তখন পূজা করি আঁখি-জলে ॥
আমি লুকাইয়া কাঁদি বনের শকুন্তলা
মনের কথা এ জনমে হ’ল না বলা।
গভীর নিশীথে বন-ঝিল্লির সুরে, ডাকি দূর বন্ধুরে –
আমি ঝ’ড়ে পড়ি যবে প্রভাতে সবার হৃদয় মুকুল খোলে ॥

Categories

আমি যার নূপুরের ছন্দ বেণুকার সুর

আমি যার নূপুরের ছন্দ বেণুকার সুর –
কে সেই সুন্দর কে!
আমি যার বিলাস-যমুনা বিরহ-
বিধুর কে সেই সুন্দর কে।।
যাহার গানের আমি বনমালা
আমি যার কথার কুসুম-ডালা,
না-দেখা সুদূর – কে সেই সুন্দর কে।।
যার শিখী-পাখা লেখনী হয়ে গোপনে মোরে কবিতা লেখায় সে রহে কোথায় হায়!
আমি যার বরষার আনন্দ-
কেকা নৃত্যের সঙ্গিনী দামিনী-রেখা,
যে মম অঙ্গে কাঁকন-কেয়ূর কে সেই সুন্দর কে।।

Categories

আমার হৃদয় হবে রাঙাজবা দেহ বিল্বদল

আমার হৃদয় হবে রাঙাজবা দেহ বিল্বদল,
মুক্তি পাবো ছুঁয়ে মুক্তকেশীর চরণতল॥
মোর বলির পশু হবে সর্বকাম,
মোর পূজার মন্ত্র হবে মায়ের নাম,
মোর অশ্রু দেবো মা’র চরণে সেই তো গঙ্গাজল॥
মোর আনন্দ মাকে দেবো তাই হবে চন্দন,
মোর পুষ্পাঞ্জলি হবে আমার প্রাণ মন।
মোর জীবন হবে আরতি-দীপ,
মোর গুরু হবেন শঙ্কর-শিব,
মোর কাঁটার জ্বালা পদ্ম হবে শুভ্র সুনির্মল॥

Categories

আমার হৃদয় মন্দিরে ঘুমায় গিরিধারী

আমার হৃদয় মন্দিরে ঘুমায় গিরিধারী।
জাগে আমার জাগ্রত প্রেম দুয়ারে তার দ্বারী ॥
কানু আমার বুকে ঘুমায় –
ভক্তি জেগে চামর ঝুলায়,
শিয়রে দীপ আমার আঁখি, প্রীতি দাসী তারি ॥
চোরের মত মোর গুরুজন ঘুরুক কাছে কাছে –
আমি তাদের ভয় করিনে, (আমার) প্রেম যে জেগে আছে।
আধেক রাতে নিরালাতে
জাগবে হরি, ধরবে হাতে,
ওগো ধ্যান করে গো সেই আশাতে এ প্রাণ রাধা-প্যারী ॥

Categories

আমার হৃদয় অধিক রাঙা মা গো রাঙা জবাব চেয়ে

আমার হৃদয় অধিক রাঙা মা গো রাঙা জবাব চেয়ে,
আমি সেই জবাতে ভবানী তোর চরণ দিলাম ছেয়ে॥
মোর বেদনার বেদির ‘পরে
বিগ্রহ তোর রাখবো ধ‘রে
পাষাণ দেউল সাজে না – তোর আদরিণী মেয়ে॥
স্নেহ পূজার ভোগ দেবো মা, অশ্রু-পূজাঞ্জলি,
অনুরাগের থালায় দেবো ভক্তি-কুসুম-কলি।
অনিমেষ আঁখির বাতি
রাখবো জ্বেলে দিবস রাতি,
তোর রূপ হবে মা আরও শ্যামা (আমার) অশ্রুজলে নেয়ে॥

Categories

আমার হাতে কালি মুখে কালি

আমার হাতে কালি মুখে কালি,
মা আমার কালিমাখা মুখ দেখে মা পাড়ার লোকে হাসে খালি।।
মোরলেখাপড়া হ’ল না মা,
আমি ‘ম’ দেখিতেই দেখি শ্যামা,
আমি ‘ক’ দেখতেই কালী ব’লে নাচি দিয়ে করতালি।।
কালো আঁক দেখে মা ধারাপাতের ধারা নামে আঁখি পাতে,
আমারবর্ণ পরিচয় হ’লো না মা তোর বর্ণ বিনা কালী।
যা লিখিস মা বনের পাতায় সাগর জলে আকাশ খাতায়,
আমি সে লেখা তো পড়তে পারি মূর্খ বলে দিক্‌ না গালি মা,
লোকে মূর্খ ব’লে দিক্‌ না গালি।।

Categories