এত কথা কি গো কহিতে জানে

এত কথা কি গো কহিতে জানে
চঞ্চল ঐ আঁখি
নীরব ভাষায় কি যে ক’য়ে যায়
ও সে মনের বনের পাখি।।

বুঝিতে পারি না ঐ আঁখির ভাষা
জলে ডুবে তবু মেটে না পিপাসা,
আদর সোহাগ প্রেম ভালোবাসা
অভিমান মাখামাখি।।

মুদিত কমলে ভ্রমরেরি প্রায়
বন্দি হইয়া কাঁদিয়া বেড়ায়
চাহিয়া চাহিয়া মিনতি জানায়
সুনীল আকাশে ডাকি’।।

মানস-সায়রে মরালেরি প্রায়
গহন সলিলে ভেসে ভেসে চায়।
আমার হিয়ার নিভৃত ব্যথায়
সাধ যায় ধরে রাখি।।

এত কথা কি গো কহিতে জানে
রাগ : দেশ-খাম্বাজ, তাল : যৎ

Categories

এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি

এই সুন্দর ফুল সুন্দর ফল মিঠা নদীর পানি
খোদা তোমার মেহেরবানী।
শস্যশ্যামল ফসল ভরা মাটির ডালিখানি
খোদা তোমার মেহেরবানী।।

তুমি কতই দিলে রতন
ভাই বেরাদর পুত্র স্বজন,
ক্ষুধা পেলেই অন্ন জোগাও
মানি চাইনা মানি।।

খোদা! তোমার হুকুম তরক করি আমি প্রতি প্রায়,
তবু আলো দিয়ে বাতাস দিয়ে বাঁচাও এ বান্দায়।
শ্রেষ্ঠ নবী দিলে মোরে
তরিয়ে নিতে রোজ- হাশরে,
পথ না ভুলি তাই ত দিলে
পাক কোরানের বাণী।।
খোদা, তোমার মেহেরবানী।।

এলো এলো শবে রাত, তোরা জ্বালরে বাতি

এলো এলো শবে রাত, তোরা জ্বালরে বাতি
হোক রওশন মুসলিম জাহানের অন্ধকার রাতি।
আজ ফেরদৌসেরি হূর-পরীরা আলোতে রাঙে
চাঁদসে তারার প্রদীপ ভাষায় আসমানী গাঙে
ফেরেস্তা সব হয়েছে আজ মোদের সাথী

আজরে জ্বালরে বাতি প্রিয় জনের আন্ধার ঘরে
আজ পরস্ব্পরের লুকিয়ে তারা এসেছে ঘরে
রাখ তাদের তরে অশ্রু ভেজা হৃদয় বাতি।

এ বাসি বাসরে আসিলে কে গো ছলিতে

এ বাসি বাসরে আসিলে কে গো ছলিতে।
কেন পুন বাঁশি বাজালে কাফি ললিতে।।
নিশীথ গভীরে কেন আঁখি-নীরে এলে ফিরে ফিরে গোপন কথা বলিতে।।
দলিত কুসুম-দলে রচিয়াছি শয়ন,
অন্ধ তিমির রাতি, নিভু নিভু নয়ন;
মরণ বেলায় প্রিয় আনিলে কি অমিয়,
এলে কি গো নিঠুর ঝরা ফুল দলিতে।।
এ বাসি বাসরে আসিলে কে গো ছলিতে ঠুংরী ।

Categories

এত জল ও কাজল চোখে, পাষাণী আন্‌লে বল কে

এত জল ও কাজল চোখে, পাষাণী আন্‌লে বল কে।
টলমল জল–মোতির মালা দুলিছে ঝালর–পলকে।।
দিল কি পুব হাওয়াতে দোল, বুকে কি বিঁধিল কেয়া?
কাঁদিয়া কুটিলে গগন এলায়ে ঝামর–অলকে।।
চলিতে পৈঁচি কি হাতের বাঁধিল বৈচি–কাঁটাতে?
ছাড়াতে কাঁচুলির কাঁটা বিঁধিল হিয়ার ফলকে।।
মুকুলী–মন সেধে সেধে কেবলি ফিরিনু কেঁদে,
সরসীর ঢেউ পলায় ছটি’ না ছুঁতেই নলিন–নোলকে।।
বুকে তোর সাত সাগরের জল, পিপাসা মিটিল না কবি
ফটিক জল! জল খুঁজিস্‌ যেথায় কেবলি তড়িৎ ঝলকে।।

Categories

একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে

একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে
যেন কাহার ভাঙা কলস আকাশ গাঙে ভাসে।।
সেই কলসি হতে ধরার পরে
অঝোর ধারায় মধু ঝরে রে
দলে দলে তাই কি তারার মৌমাছিরা আসে।।
সেই মধু পিয়ে ঘুমের নেশায় ঝিমায় নিশীথ রাতি
বন-বধূ সেই মধু ধরে ফুলের পাত্র পাতি।
সেই মধু এক বিন্দু পিয়ে
সিন্ধু ওঠে ঝিলমিলিয়ে রে
সেই চাঁদেরই আধখানা কি তোমার মুখে হাসে।।

Categories

একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে

একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে,
তোমায় আমার অনেক যুগের অনেক কথা বলার আছে।।
গ্রহ ঘিরে উপগ্রহ, ঘোরে যেমন অহরহ;
আমার আকুল এ বিরহ তেমনি প্রিয় তোমায় যাচে॥
চিরকালই রইলে তুমি আমার পাওয়ার বহুদূরে
আজকে ক্ষণিক কইব কথা সকরুণ গানের সুরে।
করব পূজা গানে গানে, চাইব না আর নয়ন পানে;
আমার চোখের অশ্রুলেখা দেখে তুমি চেন পাছে॥

Categories

এইশিকল পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল

এইশিকল পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল।
এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল।।
তোদেরবন্ধ কারায় আসা মোদের বন্দী হতে নয়,
ওরে ক্ষয় করতে আসা মোদের সবার বাঁধন–ভয়।
এইবাঁধন প’রেই বাঁধন–ভয়কে কর্‌ব মোরা জয়,
এইশিকল– বাঁধা পা নয় এ শিকল ভাঙা কল।।
তোমার বন্ধ ঘরের বন্ধনীতে কর্‌ছ বিশ্ব গ্রাস,
আর ভয় দেখিয়েই ক’র্‌বে ভাবছ বিধির শক্তি হ্রাস
সেই ভয় দেখানো ভূতের মোরা ক’র্‌বো সর্বনাশ,
এবারআন্‌বো মাভৈঃ বিজয়–মন্ত্র বল–হীনের বল।।
তোমরাভয় দেখিয়ে কর্‌ছ শাসন জয় দেখিয়ে নয়;
সেইভয়ের টুঁটি ধর্‌ব টিপে কর্‌ব তারে লয়।
মোরা আপনি ম’রে মরার দেশে আন্‌ব বরাভয়,
প’রেফাঁসি আন্‌ব হাসি মৃত্যু–জয়ের ফল।।
ওরে ক্রন্দন নয় বন্ধন এই শিকল–ঝঞ্ঝনা,
এ যেমুক্তি–পথের অগ্রদূতের চরণ–বন্দনা!
এইলাঞ্ছিতেরাই অত্যাচারকে হান্‌ছে লাঞ্ছনা,
মোদেরঅশ্রু দিয়েই জ্ব’লবে দেশে আবার বজ্রানল।।

Categories

এই আমারদের বাংলাদেশ

এই আমারদের বাংলাদেশ এই আমাদের বাংলাদেশ
যে দিকে চাই স্নিগ্ধ শ্যামল চোখ জুড়ানো রূপ অশেষ।।
চন্দনিত শীতল বাতাস বয় এ দেশে নিরন্তর
জোছনা সম কোমল হয়ে আসে হেথায় রবির কর
জীবন হেথায় স্নেহ সরস সরল হৃদয় সহজ বেশ।।
নিত্য হেথা করছে মেঘে স্বর্গ হতে শান্তি জল
মাঠে ঘাটে লক্ষ্মী হেথায় ছড়িয়ে রাখে ফুল কমল।
হাঙ্গোর কুমির শার্দুল সাপ খেলার সাথি এই জাতির
দিল্লির যশ করল হরণ এই দেশেরি প্রতাপ বীর
একদা এই দেশের ছেলে জয় করেছে দেশ বিদেশ।।

রেকর্ড:‘প্রতাপদিত্য’, (নাটিকার: যোগেশ চৌধুরী)

Categories

এ নহে বিলাস বন্ধু ফুটেছি জলে কমল

এ নহে বিলাস বন্ধু ফুটেছি জলে কমল
এ যে ব্যথা রাঙা হৃদয় আখিঁ জলে টলমল।।
কমল মৃণাল দেহ ভরেছে কন্টক ঘায়
শরণ লয়েছি গো তাই শীতল দীঘির জল।।
ডুবেছি আজ কালো জলে কত যে জ্বালা স’য়ে
শত ব্যথা ক্ষত লয়ে হইয়াছি শতদল।।
কবি রে কোন ক্ষত মুখে ফোটে যে তোর গীত সুর
সে ক্ষত দেখিল না কেউ দেখিল তোরে কেবল
সে গীতি দেখিল না কেউ শুনিল গীতি কেবল।।

Categories