ভাঙা মন (আর) জোড়া নাহি যায়
ওগো ঝরা ফুল আর ফেরে না শাখায়।।
শীতের হাওয়ায় তুষার হয়ে
গলি’ খরতাপে বারি যায় ব’য়ে
গলে নাক’ আর হৃদয়-তুষার এ উষ্ণ ছোঁওয়ায় ।।
গাঁথি’ ফুলমালা নাহি দিয়া গলে
শুকালে নিঠুর তব মুঠি-তলে,
হাসিবে না সে ফুল শত আঁখি-জলে আর সে শোভায়।
স্রোতের সলিলে
যে বাঁধ বাঁধিলে
ভাঙিয়ে সে বাঁধ তোমারে ভাসায়।।
ভ
ভাইয়ের দোরে ভাই কেঁদে যায় টেনে নে না তারে কোলে
ভাইয়ের দোরে ভাই কেঁদে যায় টেনে নে না তারে কোলে
মুছিয়ে দে তার নয়নেরি জল (সে যে) আপন মায়ের ছেলে।।
এত কাল যদি ছিলি এক ঠাঁই
আজ কেন ছাড়া হলি ঠাঁই ভাই
ভাই বিনে তোর আর কেহ নাই দিতে প্রাণ অবহেলে।।
বিপদেতে পাবি কাহারে তখন
ভাই যদি রয় ফিরায়ে বদন
সেই ভা’য়ে তোর পরের মতন দিসনে আজিকে ঠেলে।।
ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার পাইব কি আর এমন গান
ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার পাইব কি আর এমন গান!
সেদিনদুয়ার ভেঙে আসবে জোয়ার মরা গাঙে ডাকবে বান।।
তোরা স্বার্থ-পিশাচ যেমন কুকুর তেমনি মুগুর পাস রে মান।
সেই কলজে চুঁয়ে গলছে রক্ত দলছে পায়ে ডলছে কান।।
ওরে তোরা করিস লাঠালাঠি সিন্ধু-ডাকাত লুটছে ধান!
তাই গোবর-গাদা মাথায় তোদের কাঁঠাল ভেঙে খায় শেয়ান।।
ছিলি সিংহ ব্যাঘ্র, হিংসা-যুদ্ধে আজকে এমন ক্ষিন্ন প্রাণ।
মুখের গ্রাস ঐ গিলছে শেয়াল, তোমরা শুয়ে নিচ্ছ ঘ্রাণ।।
তোরা বাঁদর ডেকে মানলি সালিশ ভাইকে দিতে ফাটলো প্রাণ!
সালিশনিজেই, ‘খা ডালা সব’, বোকা তোদের এই দেখান।।
তোরা নাক কেটে নিজ পরের যাত্রা ভঙ্গ করিস বুদ্ধিমান
তোদেরকে যে ভালো কে যে মন্দ সব শিয়ালই এক সমান।।
শুনি আপন ভিটের কুকুর রাজা, তার চেয়েও হীন তোদের প্রাণ।
তাই তোদের দেশ এই হিন্দুস্থানে নাই তোদেরই বিন্দু স্থান।।
আজ সাধে ভারত-বিধাতা কি চোখ বেঁধে ঐ মুখ লুকান!
তোরা বিশ্বে যে তার রাখিসনে ঠাঁই কানা গরুর ভীন বাথান।।
তোরা করলি কেবল অহরহ নীচ কলহের পরল পান।
আজ বুঝলি নে হায় নাড়ি-ছেড়া মায়ের পেটের ভায়ের টান।।
ভরিয়া পরান শুনিতেছি গান আসিবে আজ বন্ধু মোর
ভরিয়া পরান শুনিতেছি গান আসিবে আজ বন্ধু মোর!
স্বপন মাখিয়া সোনার পাখায় আকাশে উধাও চিত–চকোর।।
হিজল–বিছানো বন–পথ দিয়া
রাঙায়ে চরণ আসিবে গো প্রিয়া।
নদীর পারে বন–কিনারে ইঙ্গিত হানে শ্যাম কিশোর।।
চন্দ্রচূড় মেঘের গায়
মরাল–মিথুন উড়িয়া যায়,
নেশা ধরে চোখে আলো–ছায়ায় বহিছে পবন গন্ধ –চোর।।
ভবনে আসিল অতিথি সুদূর
ভবনে আসিল অতিথি সুদূর।
সহসা উঠিল বাজি রুমু রুমু ঝুম
নীরব অঙ্গনে চঞ্চল নূপুর।।
মুহু-মুহু বন -কুহু বোলে
দোয়েল ধ্যান ভুলি চমকি আখিঁ খোলে
কে গো কে বলে বন-ময়ূর।।
দগ্ধ হিয়ার জ্বালা জুড়ায়ে
সজল মেঘের শীতল চন্দন কে দিল বুলায়ে?
বকুল কেয়া বীথি হ’তে
ছুটে এলো সমীরণ চঞ্চল স্রোতে
চাদিঁনী নিশীথের আবেশ আনে
মিলন তন্দ্রাতুর অলস-দুপুর।।
ভক্ত নরের কাছে হে নারায়ণ চিরদিন আজ হারি
ভক্ত নরের কাছে হে নারায়ণ চিরদিন আজ হারি
তাই তো তোমায় নামায়েছি ব্রজে গোলক হইতে কাড়ি॥
চতুর্ভুজের দ্বিভুজ হরিয়া বেঁধেছি যশোদা দুলাল করিয়া
বনমালা পীত বসন পরিয়া হয়েছ ময়ূর মুকুটধারী॥
রাঙা পায়ে তব নূপুর পরায়ে নাচায়েছি পথ মাঝে
হাতে দিয়ে বেণু সাথে দিয়ে ধেণু সাজানু গোপাল সাজে।
ভগবান বলে মোরা না ধেয়াই চোর কপট নিঠুর বলি তাই
সুমধুর গালি দিয়েছি কানাই বামে দিয়ে রাধা প্যারী॥