হায় ভিখারি কাহার কাছে হাত পাতিলে হায়।
তোমার চেয়েও আমি যে দীন কাঙাল অসহায়।।
আমার হয়ত কিছু ছিল কভু
সব নিয়েছেন কেড়ে প্রভু
আমায় তিনি নেননি তবু তাঁহার রাঙা পায়।।
তোমায় তিনি পথ দেখালেন ভাবনা কিসের ভাই
তোমার আছে ভিক্ষা ঝুলি আমার তাহাও নাই।
চাইনে তবু আছি পড়ে
সংসারে জড়িয়ে ধরে
কবে তোমার মতন পথের ধূলি মাখব সারা গায়।।
হ
হায় আঙিনায় সখি আজো সেই চাঁপা ফোটে
হায় আঙিনায় সখি আজো সেই চাঁপা ফোটে।
হায় আকাশে সখি আজো কি সেই চাঁদ ওঠে।।
সখি তাহার হাতের হেনা গাছে
বুঝি প্রথম মুকুল ধরিয়াছে।
হায় যমুনায়, বাঁশি বাজে কি আর ছায়ানটে।।
শিয়রে জানালা খুলে দে বাহিরে চাহিয়া দেখি
আমার বাগানে আবার বসন্ত আসিয়াছে কি?
দেখি সে ডালিম ফুলে হায় আছে কি সে রঙ আগেকার।
ও-বাড়ির ছাদের টবে সই বেলফুল ফুটলো কি আবার?
আজি আসিবে সে মনে লাগে
তারি আসার আভাস মনে জাগে
হায় বুঝি তাই, মোর মরণ মধুর হয়ে ওঠে।।
হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে কুড়াই ঝরা ফুল একেলা আমি
হারানো হিয়ার নিকুঞ্জপথে কুড়াই ঝরা ফুল একেলা আমি।
তুমি কেন হায় আসিলে হেথায় সুখের স্বরগ হইতে নামি।।
চারিপাশে মোর উড়িছে কেবল
শুকনো পাতা মলিন ফুল–দল,
বৃথাই কেন হায় তব আঁখিজল ছিটাও অবিরল দিবস–যামী।।
এলে অবেলায় পথিক বেভুল
বিঁধিছে কাঁটা নাহি যবে ফুল,
কি দিয়ে বরণ করি ও চরণ নিভিছে জীবন, জীবন–স্বামী।।
হাতে হাত দিয়ে আগে চল হাতে নাই থাক হাতিয়ার
হাতে হাত দিয়ে আগে চল হাতে নাই থাক হাতিয়ার।
জমায়েত হও, আপনি আসিবে শক্তি জুলফিকার।।
আন আলীর শৌর্য, হোসেনের ত্যাগ ওমরের মত কর্মানুরাগ;
খালেদের মত সব অশান্ত ভেঙে কর একাকার।।
ইসলামে নাই ছোট বড় আর আশরাফ আতরাফ
নিষ্ঠুর হাতে এই ভেদ জ্ঞান কর মিসমার সাফ।
চাকর সৃজিতে , চাকরি করিতে, ইসলাম আসে নাই পৃথিবীতে।
মরিবে ক্ষুধায় কেহ নিরন্ন, কারো ঘরে রবে অঢেল অন্ন
এ জুলুম সহেনি, ইসলাম, সহিবে না আজো আর।।
হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল
হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল
এনে দে এনে দে নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।
কুস্মী-রঙ শাড়ি, চুড়ি বেলোয়ারি
কিনে দে হাট থেকে, এনে দে মাঠ থেকে
বাবলা ফুল, আমের মুকুল, নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।।
তুর্কুট্ পাহাড়ে শাল-বনের ধারে বস্বে মেলা আজি বিকাল বেলায়,
দলে দলে পথে চলে সকাল হতে বেদে-বেদেনী নূপুর বেঁধে পায়
যেতে দে ওই পথে বাঁশি শুনে’ শুনে’ পরান বাউল
নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।।
পলার মালা নাই কী যে করি ছাই,
খুঁজেএনে দে এনে দে রে সিঁয়া-কূল
নৈলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।।
সিনেমা: সাপুড়ে
হরি হে তুমি তাই দূরে থাক স’রে
হরি হে তুমি তাই দূরে থাক স’রে
হরি প্রভু বলে মোরা দূরে রাখি
পাষাণ দেউলে রাখিয়াছি হায় তোমারে পাষাণ করে॥
তোমায় চেয়েছিল গোপিনীরা
সেদিনও চেয়েছি মীরা ডেকে প্রিয়তম বলে
তোমায় গোপাল বলিয়া ডাকিয়া পাইল যশোদা মা শচী কোলে
অন্তরতম হতে নিশিদিন থাক তুমি অন্তরে॥
দেবতা ভাবিয়া পূজা দিই মোরা তুমি তাহা নাহি খাও
তুমি লুকায়ে ভিখারি সাজিয়া মোদের পাতের অন্ন চাও।
রাখাল ছেলের আধ খাওয়া ফল
কেড়ে খাও তুমি হে চির সজল
মোরা ভয় করি তাই লুকাইয়া থাক তুমি অভিমান ভরে॥
হংস-মিথুন ওগো যাও ক’য়ে যাও
হংস-মিথুন ওগো যাও ক’য়ে যাও।
বৈশাখী তৃষ্ণার জল কোথা পাও।।
কোন মানস-সরোবর জলে
পদ্মপাতার ছায়া-তলে,
পাখায় বাঁধিয়া পাখা দু’জনে প্রখর বিরহ দাহন জুড়াও।।
অলস দুপুর মোর কাটে না একা,
ঝ’রে যায় চন্দন-পত্রলেখা।
কখন আসিবে মেঘ নভে
মিটিবে আমার তৃষ্ণা কবে,
তৃষায় মূর্ছিতা চাতকী কোথায় তাহার ঘনশ্যাম, ব’লে দাও।।