কন্যার পায়ের নূপুর বাজে রে বাজে রে।
রুমুঝুমু রুমুঝুমু বাজে রে বাজে রে।
যেন ভোমরারি ঝাঁক উড়ে গেল ফুল-বনের মাঝে রে।।
কালো জলে নামলো যেন বুনো হাসেঁর দল,
যেন পাহাড় বেয়ে ছুটে এলো ঝর্ণা ছলছল
থির সায়রে টাপুর-টুপুর ঝরে মেঘের জল
যেন বাদল সাঝেঁ রে।।
যেন আচমকা নিঝুম রাতে গাঙে জোয়ার এলো
ঝরা পাতায় চৈতী বাতাস বইলো এলোমেলো।
সে সুর ওঠে রিমঝিমিয়ে
আমার বুকে চমক দিয়ে
মহুয়া-ডালে গানের পাখি নীরব হলো লাজে রে।।
kazinazrulislam
ও শাপ্লা ফুল নেবো না বাবলা ফুল এনে দে
মেয়েঃ ও শাপ্লা ফুল নেবো না বাবলা ফুল এনে দে
নইলে দেবো না বাঁশি ফিরিয়ে।
ছেলেঃ খুলে বেণীর বিনুনী, খোঁপার চিরুনি
হাতে দে, যাব খানিক জিরিয়ে।
মেয়েঃ বন-পায়রার পালক দে কুড়িয়ে,
ছেলেঃ তোর চোখের চাওয়া পায়রা দিল উড়িয়ে,
দুজনেঃ মোদের ঝগড়া দেখে হালকা হাওয়া বহে ঝিরঝিরিয়ে।
ছেলেঃ তোর জোড়া ভুরু-ধনুক মোর নাসিকা বাঁশি লো
মেয়েঃ চাঁদের চেয়ে ভালো লাগে
কালো রূপের হাসি রে তোর কালো রূপের হাসি
ছেলেঃ ওই কালো চোখের হাসি।
মেয়েঃ তুই যাদু করে মন দিলি দুলিয়ে
দুজনেঃ মোদের কথা শুনে শিরিষ পাতা ওঠে শিরশিরিয়ে॥
সিনেমাঃ ‘অভিনয় নয়’
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন্ আসমানি তাগিদ।।
তোর সোনা–দানা বালাখানা সব রাহেলিল্লাহ্।
দে জাকাত মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিদ্।।
আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে।
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।।
আজ ভুলে যা তোর দোস্ত ও দুশমন হাত মিলাও হাতে।
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরিদ।।
ঢাল হৃদয়ের তোর তশ্তরিতে শির্নি তৌহিদের।
তোর দাওয়াত কবুল করবে হজরত হয় মনে উম্মীদ।।
ও ভাইখাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি আমার দেশের মাটি
ও ভাইখাঁটি সোনার চেয়ে খাঁটি আমার দেশের মাটি।।
এই দেশেরই মাটি জলে এই দেশেরই ফুলে ফলে
তৃষ্ণা মিটাই মিটাই ক্ষুধা পিয়ে এরি দুধের বাটি।।
এই মায়েরই প্রসাদ পেতে মন্দিরে এর এঁটো খেতে
তীর্থ ক’রে ধন্য হতে আসে কত জাতি।
ও ভাইএই দেশেরই ধূলায় পড়ি’
মানিক যায় রে গড়াগড়ি
ও ভাইবিশ্বে সবার ঘুম ভাঙালো
এই দেশেরই জিয়ন–কাঠি।।
এই মাটি এই কাদা মেখে
এই দেশেরই আচার দেখে
সভ্য হ’লো নিখিল ভুবন দিব্য পরিপাটি।
ও ভাইসন্ন্যাসিনী সকল দেশে জ্বাল্লো আলো
ভালোবেসে মাআঁধার রাতে এক্লা জাগে আগ্লে রে এই শ্মশান–ঘাঁটি ।।
ও বৌদি তোর কি হয়েছে চোখে কেন জল
ও বৌদি তোর কি হয়েছে চোখে কেন জল
দাদার তরে মন বুঝি তোর হয়েছে উতল।।
তোর দিব্যি দেখেছি স্বপনে
যেন দাদা কথা কউতেছে তোর সনে
দেখিস তোরা আমার স্বপন হবে না বিফল।।
তোর কান্নার সাগরে যখন উঠেছে জোয়ার
বৌদি লো তোর চাঁদ উঠিবার নাই রে দেরি আর।
ও বৌদি তোর চোখের জলের টানে
আমার দাদার সোনার তরী আসতেছে উজানে
দেখ বাটনা ফেলে হাসছে দিদি চল ও ঘরে চল।।
ও বন্ধু! দেখলে তোমায়, বুকের মাঝে জোয়ার
ও বন্ধু! দেখলে তোমায়, বুকের মাঝে জোয়ার – ভাঁটা খেলে।
আমি একলা ঘাটে কুলবধূ কেন তুমি এলে
বন্ধু, কেন তুমি এলে।।
ও বন্ধু, আমার অঙ্গে কাটা দিয়ে ওঠে বাজাও যখন বাঁশি
আমি খিড় কি দুয়ার দিয়ে বন্ধু, জল ভরিতে আসি
ভেসে’ নয়ন-জলে ঘরে ফিরি ঘাটে কলস ফেলে।।
আমার পাড়ায়, বন্ধু, তোমার নাম যদি নেয় কেউ
বুকে আমার দুলে ওঠে পদ্মা নদীর ঢেউ বন্ধু পদ্মা নদীর ঢেউ।
ওগো ও চাঁদ, এনো না আর
দু’কূল-ভাঙা এমন জোয়ার
কত ছল ক’রে জল লুকাই চোখের কাঁচা কাঠে আগুন জ্বেলে।।
একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে
একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে
যেন কাহার ভাঙা কলস আকাশ গাঙে ভাসে।।
সেই কলসি হতে ধরার পরে
অঝোর ধারায় মধু ঝরে রে
দলে দলে তাই কি তারার মৌমাছিরা আসে।।
সেই মধু পিয়ে ঘুমের নেশায় ঝিমায় নিশীথ রাতি
বন-বধূ সেই মধু ধরে ফুলের পাত্র পাতি।
সেই মধু এক বিন্দু পিয়ে
সিন্ধু ওঠে ঝিলমিলিয়ে রে
সেই চাঁদেরই আধখানা কি তোমার মুখে হাসে।।
একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে
একটুখানি দাও অবসর বসতে কাছে,
তোমায় আমার অনেক যুগের অনেক কথা বলার আছে।।
গ্রহ ঘিরে উপগ্রহ, ঘোরে যেমন অহরহ;
আমার আকুল এ বিরহ তেমনি প্রিয় তোমায় যাচে॥
চিরকালই রইলে তুমি আমার পাওয়ার বহুদূরে
আজকে ক্ষণিক কইব কথা সকরুণ গানের সুরে।
করব পূজা গানে গানে, চাইব না আর নয়ন পানে;
আমার চোখের অশ্রুলেখা দেখে তুমি চেন পাছে॥
এইশিকল পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল
এইশিকল পরা ছল মোদের এ শিকল-পরা ছল।
এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল।।
তোদেরবন্ধ কারায় আসা মোদের বন্দী হতে নয়,
ওরে ক্ষয় করতে আসা মোদের সবার বাঁধন–ভয়।
এইবাঁধন প’রেই বাঁধন–ভয়কে কর্ব মোরা জয়,
এইশিকল– বাঁধা পা নয় এ শিকল ভাঙা কল।।
তোমার বন্ধ ঘরের বন্ধনীতে কর্ছ বিশ্ব গ্রাস,
আর ভয় দেখিয়েই ক’র্বে ভাবছ বিধির শক্তি হ্রাস
সেই ভয় দেখানো ভূতের মোরা ক’র্বো সর্বনাশ,
এবারআন্বো মাভৈঃ বিজয়–মন্ত্র বল–হীনের বল।।
তোমরাভয় দেখিয়ে কর্ছ শাসন জয় দেখিয়ে নয়;
সেইভয়ের টুঁটি ধর্ব টিপে কর্ব তারে লয়।
মোরা আপনি ম’রে মরার দেশে আন্ব বরাভয়,
প’রেফাঁসি আন্ব হাসি মৃত্যু–জয়ের ফল।।
ওরে ক্রন্দন নয় বন্ধন এই শিকল–ঝঞ্ঝনা,
এ যেমুক্তি–পথের অগ্রদূতের চরণ–বন্দনা!
এইলাঞ্ছিতেরাই অত্যাচারকে হান্ছে লাঞ্ছনা,
মোদেরঅশ্রু দিয়েই জ্ব’লবে দেশে আবার বজ্রানল।।
এই আমারদের বাংলাদেশ
এই আমারদের বাংলাদেশ এই আমাদের বাংলাদেশ
যে দিকে চাই স্নিগ্ধ শ্যামল চোখ জুড়ানো রূপ অশেষ।।
চন্দনিত শীতল বাতাস বয় এ দেশে নিরন্তর
জোছনা সম কোমল হয়ে আসে হেথায় রবির কর
জীবন হেথায় স্নেহ সরস সরল হৃদয় সহজ বেশ।।
নিত্য হেথা করছে মেঘে স্বর্গ হতে শান্তি জল
মাঠে ঘাটে লক্ষ্মী হেথায় ছড়িয়ে রাখে ফুল কমল।
হাঙ্গোর কুমির শার্দুল সাপ খেলার সাথি এই জাতির
দিল্লির যশ করল হরণ এই দেশেরি প্রতাপ বীর
একদা এই দেশের ছেলে জয় করেছে দেশ বিদেশ।।
রেকর্ড:‘প্রতাপদিত্য’, (নাটিকার: যোগেশ চৌধুরী)