কত যুগ যেন দেখিনি তোমারে দেখি নাই কতদিন।
তুমি যে জীবন, তোমারে না হেরি’, হয়েছিনু প্রাণহীন।।
তুমি যেন বায়ু, বায়ু যবে নাহি বয়
আমি ঢুলে পড়ি আয়ু মোর নাহি রয়,
তুমি যেন জল, বাঁচিতে পারিনা জল বিনা আমি মীন।।
তুমি জানো নাগো তব আশ্রয় বিনা আমি কত অসহায়,
তুমি না ধরিলে আমার এ তনু বাতাসে মিশায়ে যায়।
তাই মোর দেহ পাগলের প্রায়
তোমার অঙ্গ জড়াইতে চায়,
তাই উপবাসী তনু মোর হের দিনে দিনে হয় ক্ষীণ।।
ক
কত যুগ পাই নাই তোমার দেখা
কত যুগ পাই নাই তোমার দেখা
থাকিতে পারি না আর একা একা।।
জানি না কোথায় থাকো
সেথায় আমারে ডাকো
মুছে এলো বুকে বঁধু স্মৃতির রেখা।।
তুমি জলধি, তোমাতে মিশে শতেক নদী
আম রুদ্ধ-সায়র কাঁদি নিরবধি।
দেখা কি পাব না হায়
আশা যে ফুরায়ে যায়
শ্রাবণে এলো গো মেঘ, কাঁদিছে কেকা।।
কত ফুল তুমি পথে ফেলে দাও
কত ফুল তুমি পথে ফেলে দাও (প্রিয়) মালা গাঁথ অকারনে
আমি চয়েছিনু একটি কুসুম সেই কথা পড়ে মনে।।
তব ফুলবনে কত ছায়া দোলে
জুড়াইতে চেয়েছিনু তারি তলে
চাহিলে না ফিরে চলে গেলে ধীরে ছায়া-ঢাকা অঙ্গনে।।
অঞ্জলি পাতি’ চেয়েছিনু, তব ভরা ঘটে ছিল বারি
শুষ্ক-কন্ঠে ফিরিয়া আসিনু পিপাসিত পথচারী।
বহুদিন পরে দাঁড়াইনু এসে
তোমারি দুয়ারে উদাসীন বেশে
শুকানো মালিকা কেন দিলে তুমি তব ভিক্ষার সনে।।
কত নিদ্রা যাও রে কন্যাজাগো একটু খানি
কত নিদ্রা যাও রে কন্যাজাগো একটু খানি
যাবার বেলায় শুনিয়া যাইতোমার মুখের বাণী।।
নিশীথিনীর ঘুম ভেঙে যায় চন্দ্র যখন হেসে তাকায় গো
চাতাকিনী ঘুমায় কি গোদেখলে মেঘের পানি।।
ফুলের কুঁড়ি চোখ মেলে চায় যেই না ভ্রমর বোলে (রে কন্যা)
বসন্ত আসিলে রে কন্যা বনের লতা দোলে (রে কন্যা)
যারা আছে প্রাণে প্রাণে জাগে তারা ঘুম না জানে
আমি যখন রইব না গো (তখন) জাগবে তুমি জানি।।
কত জনম যাবে তোমার বিরহে
কত জনম যাবে তোমার বিরহে
স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
শূন্য গেহ মোর শূন্য জীবনে,
একা থাকারি ব্যথা কত সহে (ওগো)
স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
দিয়েছি যে জ্বালা জীবন ভরি’ হায়
গলি নয়ন -ধারায় সে ব্যথা বহে
স্মৃতির জ্বালা পরান দহে।।
কও কথা কও কথা, কথা কও হে দেবতা
কও কথা কও কথা, কথা কও হে দেবতা।
তুমি তো জানো স্বামী আমার প্রাণে কত ব্যথা।।
মোর তরে আজি সকল দুয়ার
হইল বন্ধ হে প্রভু আমার
তুমি খোলো দ্বার! সহে না যে আর সহে না এ নীরবতা।।
শুনি অসহায় মোর ক্রন্দন
গলিবে না পাষাণের নারায়ণ
ভোলো অভিমান চরণে লুটায় পূজারিণী আশাহতা।।
নাটিকাঃ ’মীরাবাঈ’