মিলন গান | ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার

ভাই হয়ে ভাই চিনবি আবার গাইব কি আর এমন গান।
(সেদিন)দুয়ার ভেঙে আসবে জোয়ার মরা গাঙে ডাকবে বান॥

(তোরা)স্বার্থ-পিশাচ যেমন কুকুর তেমনি মুগুর পাস রে মান।
(তাই) কলজে চুঁয়ে গলছে রক্ত দলছে পায়ে ডলছে কান॥

(যত) মাদি তোরা বাঁদি-বাচ্চা দাস-মহলের খাস গোলাম।
(হায়) মাকে খুঁজিস? চাকরানি সে, জেলখানাতে ভানছে ধান॥

(মা’র) বন্ধ ঘরে কেঁদে কেঁদে অন্ধ হলো দুই নয়ান।
(তোরা) শুনতে পেয়েও শুনলিনে তা মাতৃহন্তা কুসন্তান॥

(ওরে)তোরা করিস লাঠালাঠি (আর) সিন্ধু-ডাকাত লুঠছে ধান।
(তাই) গোবর-গাদা মাথায় তোদের কাঁঠাল ভেঙে খায় শেয়ান॥

(ছিলি) সিংহ ব্যাঘ্র, হিংসা-যুদ্ধে আজকে এমনি ক্ষিণ্ণপ্রাণ।
(তোদের) মুখের গ্রাস ঐ গিলছে শিয়াল তোমরা শুয়ে নিচ্ছ ঘ্রাণ॥

(তোরা) কলুর বলদ টানিস ঘানি গলদ কোথায় নাইকো জ্ঞান।
(শুধু) পড়ছ কেতাব, নিচ্ছ খেতাব, নিমক-হারাম বে-ঈমান॥

(তোরা) বাঁদর ডেকে মানলি সালিশ, ভাইকে দিতে ফাটল প্রাণ।
(এখন) সালিশ নিজেই ‘খা ডালা সব’ বোকা তোদের এই দেখান॥

(তোরা) পথের কুকুর দু’কান-কাটা-মান-অপমান নাইকো জ্ঞান।
(তাই) যে জুতোতে মারছে গুঁতো করছ তাতেই তৈল দান॥

(তোরা) নাক কেটে নিজ পথের যাত্রা ভঙ্গ করিস বুদ্ধিমান।
(তোদের) কে যে ভাল কে যে মন্দ সব শিয়ালই এক সমান॥

(শুনি) আপন ভিটেয় কুকুর রাজা, তার চেয়েও হীন তোদের প্রাণ।
(তাই) তোদের দেশ এই হিন্দুস্থানে নাই তোদেরই বিন্দু স্থান॥

(তোদের) হাড় খেয়েছে, মাস খেয়েছে, (এখন) চামড়াতে দেয় হেঁচকা টান
(আজ) বিশ্ব-ভুবন ডুকরে ওঠে দেখে তোদের অসম্মান॥

(আজ) সাধে ভারত-বিধাতা কি চোখ বেঁধে ঐ মুখ লুকান।
(তোরা) বিশ্বে যে তাঁর রাখিস নে ঠাঁই কানা গরুর ভিন্ বাথান॥

(তোরা) করলি কেবল অহরহ নীচ কলহের গরল পান।
(আজো) বুঝলি না হায় নাড়ি-ছেঁড়া মায়ের পেটের ভায়ের টান॥

(ঐ) বিশ্ব ছিঁড়ে আনতে পারি, পাই যদি ভাই তোদের প্রাণ।
(তোরা) মেঘ-বাদলের বজ্রবিষাণ (আর) ঝড়-তুফানের লাল নিশান॥

ভুলি কেমনে আজো যে মনে

ভুলি কেমনে আজো যে মনে
বেদনা-সনে রহিল আঁকা।
আজ সজনী  দিন রজনী
সে বিনে গনি সকলি ফাঁকা।।
আগে মন করলে চুরি
মর্মে শেষে হানলে ছুরি
এত শঠতা এত যে ব্যথা
তবু যেন তা মধুতে মাখা।।
চকোরী দেখলে চাঁদে
দূর থেকে সই আজো কাঁদে
আজো বাদলে ঝুলন ঝুলে
তেমনি জলে চলে বলাকা।।
বকুলের তলায় দোদুল
কাজলা মেয়ে কুড়োয় লো ফুল
চলে নাগরী কাঁখে গাগরি
চরণ ভারি কোমর বাঁকা।।
ডালে তোর করলে আঘাত
দিস্ রে কবি ফুল সওগাত
ব্যথা-মুকুলে অলি না ছুঁলে
বনে কি দুলে ফুল-পতাকা।।

Categories

ভুল করে যদি ভালোবেসে থাকি

ভুল করে যদি ভালোবেসে থাকি
ক্ষমিয় সে অপরাধ
অসহায় মনে কেন জেগেছিলো
ভালোবাসিবার সাধ।
কতজন আসে তব ফুলবন
মলয় ভ্রমর চাঁদেরও কিরণ
তেমনি আমিও আসি অকারণ
অকরুণ উন্মাদ।
তোমার হৃদয়ে শূন্যে জ্বলিছে শত রবি-শশী তারা,
তারি মাঝে আমি ধুমকেতু সম এসেছিনু পথহারা
তবু জানি প্রিয় একদা নিশিথে
মনে পড়ে যাবে আমারে চকিতে।
সহসা জাগিবে উৎসব গীতে
সকরুণ অবসাদ…
ক্ষমিয় সে অপরাধ।

Categories

ভেসে আসে সুদূর স্মৃতির সুরভি হায় সন্ধ্যায়

ভেসে আসে সুদূর স্মৃতির সুরভি হায় সন্ধ্যায়
রহি’ রহি’ কাঁদি’ ওঠে সকরুণ পূরবী, আমারে কাঁদায়।।
কা’রা যেন এসেছিল, এসে ভালোবেসেছিল।
ম্লান হ’য়ে আসে মনে তাহাদের সে-ছবি, পথের ধুলায়।।
কেহ গেল দ’লে – কেহ ছ’লে, কেহ গলিয়া নয়ন নীরে
যে গেল সে জনমের মত গেল চলিয়া এলো না, এলো না ফিরে।
কেহ দুখ দিয়া গেল কেহ ব্যথা নিয়া গেল
কেহ সুধা পিয়া গেল কেহ বিষ করবী তাহারা কোথায় আজ
তাহারা কোথায়।।

Categories

ভুলে যেয়ো, ভুলে যেয়ো সেদিন যদি পড়ে আমায় মনে

ভুলে যেয়ো, ভুলে যেয়ো সেদিন যদি পড়ে আমায় মনে
যবেচৈতী বাতাস উদাস হয়ে ফিরবে বকুল বনে।।
তোমার মুখের জোছনা নিয়ে
উঠবে যে চাঁদ ঝিলমিলিয়ে,
হেনার সুবাস ফেলবে নিশাস তোমার বাতায়নে।।
শুনবে যেন অনেক দূরে
ক্লান্ত বাঁশির করুন সুরে-
বিদায় নেওয়া কোন বিরহীর কানে কাঁদে নিরজনে।।

Categories

ভুলিতে পারিনে তাই আসিয়াছি পথ ভুলি

ভুলিতে পারিনে তাই আসিয়াছি পথ ভুলি’।
ভোল মোর সে অপরাধ, আজি যে লগ্ন গোধূলি।।
এমনি রঙিন বেলায় খেলেছি তোমায় আমায়,
খুঁজিতে এসেছি তাই সেই পুরানো দিনগুলি।।
তুমি যে গেছ ভুলে – ছিল না আমার মনে,
তাই আসিয়াছি তব বেড়া–দেওয়া ফুলবনে।
গেঁথেছি কতই মালা এই বাগানের ফুল তুলি’–
আজও সেথা গাহে গান আমার পোষা বুলবুলি।।

Categories

ভুলি কেমনে আজও যে মনে

ভুলি কেমনে আজও যে মনে
বেদনা সনে রহিল আঁকা
আজও সজনি দিন রজনী
সে বিনে গনি সকলি ফাঁকা।।
আগে মন করলে চুরি
মর্মে শেষে হানলে ছুরি
এত শঠতা এত যে ব্যথা
তবু যেন তা মধুতে মাখা।।
চকোরী দেখলে চাঁদে
দূর থেকে সই আজও কাঁদে
আজও বাদলে ঝুলন ঝুলে
তেমনি জলে চলে বলাকা।।
বকুলের তলায় দোদুল
কাজলা মেয়ে কুড়োয় লো ফুল
চলে নাগরী কাঁখে গাগরী
চরণ ভারি কোমর বাঁকা।।
ডালে তোর করলে আঘাত
দিস্ রে কবি ফুল্ সওগাত
ব্যাথা–মুকুলে অলি না ছুঁলে
বনে কি দুলে ফুল–পতাকা।।

Categories

ভীরু এ মনের কলি ফোটালে না কেন ফোটালে না

ভীরু এ মনের কলি ফোটালে না কেন ফোটালে না –
জয় করে কেন নিলে না আমারে, কেন তুমি গেলে চলি।।
ভাঙ্গিয়া দিলে না কেন মোর ভয়,
কেন ফিরে গেলে শুনি অনুনয়;
কেন সে বেদনা বুঝিতে পার না মুখে যাহা নাহি বলি।।
কেন চাহিলে না জল নদী তীরে এসে,
সকরুণ অভিমানে চলে গেলে মরু–তৃষ্ণার দেশে।।
ঝোড়ো হাওয়া ঝরা পাতারে যেমন
তুলে নেয় তার বক্ষে আপন
কেন কাড়িয়া নিলে না তেমনি করিয়া মোর ফুল অঞ্জলি।।

Categories

ভারতের দুই নয়ন তারা হিন্দু-মুসলমান

ভারতের দুই নয়ন তারা হিন্দু-মুসলমান
দেশ জননীর সমান প্রিয় যুগল সন্তান।।
তাইতো মায়ের কোল নিয়ে ভাই
ভা’য়ে ভা’য়ে বাধে লড়াই
এই কলহের হবেই হবে মধুর অবসান
এক দেশেরই অন্নজলে এক দেহ এক প্রাণ।।
আল্লা বলে কোরান তোমায়, এলা বলে বেদ,
যেমন পানি, জলে রে ভাই শুধু নামের ভেদ।
মোদের মাঝে দেয়াল তুলতে যে চায়
জানবে মোদের শত্রু তাহায় (জানবে রে)
বিবাদ ক’রে এনেছি হায় অনেক অকল্যাণ
মিলনে আজ উঠুক জেগে নব-হিন্দুস্থান।
জেগে উঠুক হিন্দুস্থান।।

Categories

ভারতলক্ষ্মী মা আয় ফিরে এ ভারতে

ভারতলক্ষ্মী মা আয় ফিরে এ ভারতে
ব্যথায় মোদের চরণ ফেলে অরুণ আশার সোনার রথে॥
অশ্রু গঙ্গার জলে ধুই মা তোর চরণ নিতি
ত্রিশ কোটি কণ্ঠে বাজে রোদনে তোর বোধনগীতি
আয় মা দলিত রাঙা হৃদয় বিছানো পথে॥
বিজয়া তোর হ’ল কবে শতাব্দী চলিয়া যায়
ভারত-বিজয়-লক্ষ্মী ভারতে ফিরিয়া আয়
বিসর্জনের কান্না মা এবার তুই এসে থামা
সফল কর এ তপস্যা মা স্থান দে স্বাধীন জগতে॥

Categories