কুসুম-সুকুমার শ্যামল তনু হে ফুল-দেবতা লহ প্রণাম

কুসুম-সুকুমার শ্যামল তনু হে ফুল-দেবতা লহ প্রণাম।
বিটপী লতায় চিকন পাতায় ছিটাও হাসি কিশোর শ্যাম।।
পূজার থালা এ অর্ঘা-ডালা এনেছি দিতে তোমার পায়
দেহ শুভ বর কুসুম-সুন্দর হোক নিখিল নয়নাভিরাম
এ বিশ্ব বিপুল কুসুম-দেউল হোক তোমার ফুল কিশোর
মুরলী করে এসো গোলক-বিহারী হোক ভূ-লোক আনন্দ-ধাম।।

১. বাগেশ্রী-সিন্ধু
নাটকঃ‘সাবিত্রী’

Categories

কুলের আচার নাচার হয়ে আছিস কেন শিকায় ঝুলে

কুলের আচার নাচার হয়ে আছিস কেন শিকায় ঝুলে
কাচের জারে বেচারা তুই মরিস কেন ফেঁপে ফু’লে।।
কাঁচা তেঁতুল পেয়ারা আম
ডাঁশা জামরুল আর গোলাপ জাম-
যেমনি তোরে দেখিলাম অমনি সব গেলাম ভুলে।।

নাটিকাঃ‘পুতুলের বিয়ে’

Categories

কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ

কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ
জাগালে জোয়ার ভাঙ্গিলে আবার সাগর-কুলের বাঁধ।।
তিথিতে তিথিতে সুদূর অতিথি
ভোলাও জাগাও ভুলে যাওয়া স্মৃতি
এড়াইতে গিয়ে পরানে জড়াই তোমার রূপের ফাঁদ।।
চাহি না তোমায় তবু তোমারেই ভাবি বাতায়নে বসি’
আমার নিশীথে তুমি আনিয়াছ শুল্কা চতুর্দশী।
সুন্দর তুমি তবু হয় মনে
আছে কলঙ্ক জোছনার সনে
মুখোমুখি বসে কাঁদে তাই বুকে সাধ আর অবসাদ।।

Categories

কল-কল্লোলে ত্রিংশ কোটি-কণ্ঠে উঠেছে গান

কল-কল্লোলে ত্রিংশ কোটি-কণ্ঠে উঠেছে গান
জয় আর্যাবর্ত, জয় ভারত, জয় হিন্দুস্থান।।
শিরে হিমালয় প্রহরী, পদ বন্দে সাগর যাঁর,
শ‍্যাম বনানী কুন্তলা রানী জন্মভূমি আমার।
ধূসর কভু উষর মরুতে,
কখনো কোমল লতায় তরুতে,
কখনো ঈশানে জলদ-মন্দ্রে বাজে-মেঘ বিষাণ।।
সকল জাতি সকল ধর্ম পেয়েছে হেথায় টাই
এসেছিল যারা শত্রুর রূপে, আজ সে স্বজন ভাই।।
বিজয়ীর বেশে আসিল যাহারা,
আজি মা’র কোলে সন্তান তারা,
(তাই) মা’র কোল নিয়ে করে কাড়াকাড়ি হিন্দু মুসলমান।।
জৈন পার্শী বৌদ্ধ শক্তি খ্রিস্টান বৈষ্ণব
মা’র মমতায় ভুলিয়া বিরোধ এক হয়ে গেছে সব।
ভুলি’ বিভিন্ন ভাষা আর বেশ
গাহিছে সকলে আমার স্বদেশ
শত দল মিলে’ শতদল হ’য়ে করিছে অর্ঘ‍্য দান।।

Categories

করুণ কেন অরুণ আঁখি দাও গো সাকি দাও শারাব

করুণ কেন অরুণ আঁখি দাও গো সাকি দাও শারাব
হায় সাকি এ আঙ্গুরী খুন নয় ও হিয়ার খুন–খারাব।।
আর সহে না দিল্‌ নিয়ে এই দিল–দরদির দিল্‌লাগী,
তাইতে চালাই নীল পিয়ালায় লাল শিরাজি বে–হিসাব।।
হারাম কি এই রঙিন পানি আর হালাল এই জল চোখের?
নরক আমার হউক মঞ্জুর বিদায় বন্ধু! লও আদাব।।
দেখ্‌ রে কবি, প্রিয়ার ছবি এই শারাবের আর্শিতে,
লাল গেলাসের কাঁচ্‌–মহলার পার হ’তে তার শোন্‌ জবাব্‌।।

Categories

কবি, সবার কথা কইলে, এবার নিজের কথা কহ

কবি, সবার কথা কইলে, এবার নিজের কথা কহ।১
(কেন) নিখিল ভুবন অভিমানের আগুন দিয়ে দহ।।
কে তোমারে হান্‌ল হেলা, কবি!
(হায়!) সুরে সুরে আঁক কি গো সেই বেদনার ছবি?
কা’র বিরহ রক্ত ঝরায় বক্ষে অহরহ।।
কোন্‌ ছন্দময়ীর ছন্দ দোলে আমার গানে গানে,
তোমার সুরের স্রোত ব’য়ে যায় কাহার প্রেমের টানে গো –
কাহার চরণ পানে?
কাহার গলায় ঠাঁই পেল না ব’লে
(তব) কথার মালা ব্যথার মত প্রতি হিয়ায় দোলে,
(তোমার) হাসিতে যে বাঁশি বাজে, সে ত’ তুমি নহ।।

Categories

কন্যার পায়ের নূপুর বাজে রে বাজে রে

কন্যার পায়ের নূপুর বাজে রে বাজে রে।
রুমুঝুমু রুমুঝুমু বাজে রে বাজে রে।
যেন ভোমরারি ঝাঁক উড়ে গেল ফুল-বনের মাঝে রে।।
কালো জলে নামলো যেন বুনো হাসেঁর দল,
যেন পাহাড় বেয়ে ছুটে এলো ঝর্ণা ছলছল
থির সায়রে টাপুর-টুপুর ঝরে মেঘের জল
যেন বাদল সাঝেঁ রে।।
যেন আচমকা নিঝুম রাতে গাঙে জোয়ার এলো
ঝরা পাতায় চৈতী বাতাস বইলো এলোমেলো।
সে সুর ওঠে রিমঝিমিয়ে
আমার বুকে চমক দিয়ে
মহুয়া-ডালে গানের পাখি নীরব হলো লাজে রে।।

Categories

কোথায় তখত তাউস, কোথায় সে বাদশাহী

কোথায় তখত তাউস, কোথায় সে বাদশাহী।
কাঁদিয়া জানায় মুসলিম ফরিয়াদ ইয়া ইলাহী।।
কোথায় সে বীর খালিদ, কোথায় তারেক মুসা
নাহি সে হজরত আলী, সে জুলফিকার নাহি।।
নাহি সে উমর খত্তাব, নাহি সে ইসলামী জোশ
করিল জয় যে দুনিয়া, আজি নাহি সে সিপাহি।।
হাসান হোসেন সে কোথায়, কোথায় বীর শহীদান-
কোরবানি দিতে আপনায় আল্লার মুখ চাহি’।।
কোথায় সে তেজ ঈমান, কোথায় সে শান-শওকত,
তকদীরে নাই সে মাহতাব, আছে প’ড়ে শুধু সিয়াহি।।

Categories

কোথায় গেলে পেঁচা-মুখি একবার এসে খ্যাচ-খ্যাচাও

পুরুষ : কোথায় গেলে পেঁচা-মুখি একবার এসে খ্যাচ-খ্যাচাও
স্ত্রী : বলি, গাই-হারা বাছুরের মতন গোয়াল থেকে কে চ্যাঁচাও॥
পুরুষ : (বলি ও শাকচুন্নি, আহাহাহা)
অমন শ্যাওড়া বৃক্ষ ফেলে, আমার ঘাড়ে কেন এলে গো, ও হো হো
স্ত্রী : (বলি ও কালিয়া পেরেত)
তুমি উনুন-মুখো দেবতা যে তাই
ছাই-পাঁশের নৈবিদ্যি পাও।
পুরুষ : (মরি অরি অরি অরি মরি, কি যে রূপের ছিরি, আহাহাহাহা)
চন্দ্র-বদন ন্যাপা পোছা
কুত্‌কুতে চোখ নাকটি বোঁচা গো, ও হো হো
স্ত্রী : (বলি ও বেরসো কাট, বলি ও কেলো হুলো)
তুমি কাঁদলে চোখে কালি বোরোয় কয়লার ডিপোয় লজ্জা দাও
তুমি কয়লার ডিপোয় লজ্জা দাও।
পুরুষ : বলি ও জুজুবুড়ি
স্ত্রী : বলি ও ঝাঁকাভূঁড়ি
পুরুষ : ও বাবা জুজু
স্ত্রী : ও বাবা ঝাঁকা
পুরুষ : আহা, চাম্‌চিকে ওই ডানা কাটা
স্ত্রী : তুমি যেন পূজোর পাঁঠা
পুরুষ : আহা, হার মেনে যায় হাঁড়ি চাঁছা প্রিয়ে যখন খ্যাচ-খ্যাচাও।
স্ত্রী : (আ-মরি মরি, কি যে বচন সুধা)
পিঁপড়ে ধরবে ও প্রাণনাথ তুমি, শিগ্‌গির মুখে ফিনাল দাও॥

Categories

কোথায় গেলি মাগো আমার খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রেখে

কোথায় গেলি মাগো আমার খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রেখে
ক্লান্ত আমি খেলে খেলে এ সংসারে ও-মা ধুলা মেখে।।
বলেছিলি সন্ধ্যা হ’লে
ধুলা মুছে নিবি কোলে
ও-মা ছেলেরে তুই গেলি ছ’লে পাইনে সাড়া ডেকে’ ডেকে’।।
এ কি খেলার পুতুল মা গো দিয়েছিলি মন ভুলাতে
আধেক তাহার হারিয়ে গেছে আধেক ভেঙে আছে হাতে।
এ পুতুলও লাগছে মা ভার
তোর পুতুল তুই নে গো এবার
এখন সন্ধ্যা হলো ও-মা সন্ধ্যা হলো নামলো আঁধার
ঘুম পাড়া মা আঁচল ঢেকে।।

Categories